জীবনে সফল ব্যক্তিরা অনেক ভুল করে থাকেন কিন্তু তারা একই ভুলের পুনরাবৃত্তি করেন না। আমাদের ব্যবসায়িক বা পেশাজীবনের ভুলগুলো আমাদের সামনে চলার অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে। কর্মজীবনে আমরা অনেকেই নানা ধরনের ভুলের অভিজ্ঞতা অর্জন করে থাকি, যা আসলে জীবনে সফল হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কৌশল আমাদেরকে বাতলে দেয়। পেশাজীবনের এরকম কিছু ভুল থেকে আমরা জীবনে সফল হওয়ার জন্য যে গুরুত্বপূর্ণ ৫টি দিকনির্দেশনা পেয়ে থাকি YMB তা আপনাদের সামনে তুলে ধরছে।
১) সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ কি মনে করবে তা উপেক্ষা করুন।
সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ গড়পড়তা ও অতিসাধারণ হয়ে থাকেন। জীবনে সফলতার জন্য আপনি যে লক্ষ্যগুলো অর্জনের চেষ্টা করছেন তা তারা কখন অর্জন করেননি বা করতে পারবেন না। তাই এক্ষেত্রে আপনার কোন সাহায্য বা পরামর্শের প্রয়োজন হলে আপনি তাদের কাছ থেকে তা না চেয়ে বরং তাদের কাছে চান যারা তাদের জীবনে সফলতা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। আর মনে রাখবেন সফল ব্যক্তিরা সমাজে কখনো সংখ্যাগরিষ্ঠ হন না।
২) পুরাতন পন্থাগুলোকে সব সময় উপেক্ষা করবেন না।
যুবক বা তরুণরা প্রায় সময়ই কোন কিছু বৈপ্লবিক বা ভিন্ন পন্থায় করতে চান; তারা এক্ষেত্রে পুরনো বা প্রথাগত পদ্ধতিকে অকার্যকর বলে মনে করেন। এমন কি পুঁজি বাজারে বিনিয়োগের সময়ও তারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়গুলো নিয়ে যথেষ্ট চিন্তাভাবনা করেন না। এটা কিন্তু একটি মারাত্মক ভুল; কারণ এতে একদিকে যেমন আপনার সমূহ ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে ঠিক অন্যদিকে রয়েছে সময় ও চেষ্টার উভয়ের অপচয়। অথচ এক্ষেত্রে পুরাতন পন্থাগুলো সম্পূর্ণ কার্যকর, যা আপনি নিঃসন্দেহে অনুসরণ করতে পারেন। আপনার ব্যবসায়িক বা পেশাগত জীবনে যদি কোন ভুল হয়ে থাকে, তাহলে আপনি সর্বপ্রথম খেয়াল করবেন যে এসময় আপনি “অতিরিক্ত চতুরতা”র (over smartness) অবলম্বন করেছিলেন কি না।
৩) উচ্চাকাঙ্ক্ষী হওয়া।
উচ্চাকাঙ্ক্ষী হওয়ার অর্থ এই নয় যে আপনাকে বেপরোয়া হতে হবে। এরকম সব সময় মনে করবেন না যে আপনিই সব সময় জিতে যাবেন। কিন্তু জীবনে কিছু পেতে হলে আপনাকে ঝুঁকি নিতেই হবে, পাশাপাশি আপনাকে হতে হবে উচ্চাকাঙ্ক্ষী। দ্রুত পরাজয় স্বীকার করার অর্থ আপনি আপনার জীবনের অনেক জয়কেই অকালে হাত ছাড়া করলেন।
৪) ছোট ছোট অর্জনকে আপনার লক্ষ্য হিসেবে স্থির করুন।
যদি আপনি আপনার লাভের পাল্লাকে অল্প সময়েই খুব ভারী করতে চান তাহলে মনে রাখবেন আপনার ক্ষতির পাল্লাও তখন খুব ভারী হয়ে যেতে পারে। আমরা সাধারণত অল্প সময়ে অনেক বেশি লাভের কামনা করে থাকি। কিন্তু আমরা যদি যেকোনো প্রতিষ্ঠানের উদ্বর্ত-পত্রের (balance sheet) দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পারব যে ওই প্রতিষ্ঠানের আয়ের প্রধান অংশ মূলত আসছে তার ছোট ছোট অর্জন থেকেই। আর তা হচ্ছে এ প্রতিষ্ঠানটির ঐ সকল গ্রাহক/ক্রেতা যারা প্রতিষ্ঠানটির পণ্য বা সেবা বারবার ক্রয় করে থাকেন। এ রকম ছোট ছোট অর্জন হঠাৎ পেয়ে যাওয়া বিশাল অর্জন থেকে অনেক ভালো। তাই আপনি ছোট ছোট অর্জনের দিকেই প্রথমে আপনার লক্ষ্য মনোনিবেশ করুন।
৫) নিজেকে পুরোপুরি নিঃশেষ করে দেবেন না।
কর্মজীবনে বিভিন্ন কাজে আপনাকে বারবার উদ্যোগ নেয়ার প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু সেক্ষেত্রে এরকম পরিস্থিতির যেন সৃষ্টি না হয় যে আপনি আপনার সমস্ত মূলধন বা সম্পদ বিনিয়োগ করে দিলেন অতঃপর কোন অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে আপনাকে তার সব কিছুই হারাতে হলো। মনে রাখবেন আপনার হাতে যে পুঁজি বা সম্পদ রয়েছে তার একটি অংশকে আপনি সব সময় নিরাপদে সঞ্চয় করে রাখবেন, যাতে আপদ-কালীন সময়ে আপনাকে একদম নিঃস্ব না হয়ে যেতে হয়।
No comments:
Post a Comment